Jam bij gura | জাম বীজ গুঁড়া
“জাম বীজ” (Jam bij gura) বলতে সাধারণত জাম গাছের বীজ বোঝানো হয়। জাম একটি ফল যা বিভিন্ন অঞ্চলে জনপ্রিয় এবং এর বীজও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। জাম গাছের বীজ ছোট এবং শক্ত থাকে, এবং এটি কিছু সংস্কৃতিতে প্রাকৃতিক চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। জাম গাছের ফল স্বাদে মিষ্টি এবং তিক্ত হতে পারে, এবং এর বীজ থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা হয়।
জাম বীজ গুঁড়া হলো জাম গাছের বীজ থেকে তৈরি একটি গুঁড়া, যা প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই গুঁড়া বিভিন্ন রোগের প্রতিকার এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। এটি সাধারণত হজম শক্তি বাড়াতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশ, ভারত, এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে জাম গাছের বীজ কখনো কখনো চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, যেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, অন্ত্রের সমস্যা, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সুবিধা জন্য।
জাম বীজ গুঁড়ার (Jam bij gura) কিছু উপকারিতা:
জাম বীজ গুঁড়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে, যা প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জাম বীজের গুঁড়াতে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ থাকে, যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে সহায়ক। এর কিছু প্রধান উপকারিতা হলো:
-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:
জাম বীজ গুঁড়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। জাম বীজে রয়েছে জাম্বোলাইন ও জাম্বোসাইন নামক পদার্থ যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জামের বীজ রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ জামের বীজের গুঁড়া মিশিয়ে খেয়ে নেবেন। এভাবে কয়েকদিন পান করলেই সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এই পানীয় ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। যে কারণে রক্তে সুগারের মাত্রা নিম্নমুখী হয়। -
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি:
বেশিরভাগ বাঙালিরই পেটে নানা সমস্যা থাকে। গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বদহজমসহ নানা সমস্যা লেগে থাকে। পেটের সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত ওষুধ খান অনেকে। সেসব ওষুধের ফলে লিভার, কিডনিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ঘরোয়া সমাধান বেছে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কার্যকরী হতে পারে জামের বীজ। এই বীজ পেটের অসুখ থেকে সহজেই মুক্তি দিতে কাজ করবে। জামের বীজ গুঁড়া করে একগ্লাস পানিতে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে পান করলে উপকার পাবেন।। জামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ, ডেক্সটোজ ও ফ্রুকটোজ, যা মানুষের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। -
শরীরের ওজন কমানো:
Jam bij gura মেটাবোলিজম বাড়াতে সাহায্য করে, যা শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সহায়ক হতে পারে। এটি চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়া উন্নত করে। -
ত্বকের স্বাস্থ্য:
জাম বীজ গুঁড়ার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ বা সোরিয়াসিসের উপশমে সাহায্য করতে পারে। জামে আছে ইলাজিক এসিড, যা ত্বক ও চুলকে ক্ষতিকর আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির প্রভাব থেকে রক্ষা করে। -
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো:
এটি রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। -
মুখের স্বাস্থ্য:
মুখের রুচি বাড়াতে এবং মাড়ির রোগ কমাতে সহায়ক। এটি মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং দন্তের সমস্যা সমাধান করতে পারে। -
Jam bij gura অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ:
জাম বীজ গুঁড়ার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা বিভিন্ন ধরনের প্রদাহজনিত রোগে উপকারী হতে পারে। আয়ুর্বেদ মতে,জাম হল অ্যাসট্রিনজেন্ট অ্যান্টি-ডিউরেটিক, যা ঘন ঘন মূত্রত্যাগ কমাতে সাহায্য করে।হাইপোগ্লাইসেমিক গুণ আছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। -
হাড়ের ক্ষয় রোধে:
জাম বীজ হাড়ের ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।এতে আছে লৌহ,ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম যা হাড়ের ক্ষয়রোধে দারুণ কার্যকর।তাই বয়স্ক মানুষদের নিয়মিত জামের গুড়া সেবন করা উচিত। -
উচ্চ রক্তচাপ দূরে রাখে:
উচ্চ রক্তচাপ দূরে রাখতে চাইলে খাবারের ক্ষেত্রে হতে হবে সচেতন। এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা কিডনি, হার্ট, চোখ সহ বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে জামের বীজ। এই বীজের গুঁড়া মিশিয়ে পানি পান করলে তা উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করবে। এটি হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
এগুলো ছাড়াও, জাম বীজ গুঁড়ার আরো বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপকারিতা থাকতে পারে, তবে এটি ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।