Hortoki gura | হরিতকী গুঁড়া
হরিতকী গুঁড়া (Hortoki gura) হলো একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা প্রধানত হরিতকী (Terminalia chebula) গাছের ফল থেকে তৈরি হয়। হরিতকী গাছ ভারতের আদি ঔষধি গাছগুলির মধ্যে একটি, এবং এটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হরিতকী বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য পরিচিত, এবং এটি দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন রকম রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে।
Table of Contents
Toggleহরিতকী গুঁড়ার (Hortoki gura) উপকারিতা:
হরিতকী একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। এটি একটি প্রাচীন ভেষজ যা আয়ুর্বেদে খুবই জনপ্রিয়। হরি-তকী গুঁড়ার কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলো:
-
পাচন ক্রিয়া উন্নত করে:
হরিতকী খাবারের পাচন প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে। -
মালিশ হিসাবে ব্যবহার:
ত্বকের যত্নে হরিতকী গুঁড়া (Hortoki ) ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে সহায়ক এবং পিম্পল বা একনে কমাতে সাহায্য করে। -
প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট:
এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালস কমায় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। -
(Hortoki gura) হজম শক্তি বৃদ্ধি:
হরিতকী হজম শক্তি বাড়ায় এবং খাবারের পুষ্টি শোষণ করতে সহায়ক। -
মানসিক শান্তি প্রদান:
এটি মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক এবং মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে। -
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
হরিতকী (Hortoki gura) রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। -
শরীরের ডিটক্সিফিকেশন:
এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সহায়ক এবং লিভার ও কিডনি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। -
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
হরিতকী গুঁড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা সংক্রমণ ও অন্যান্য রোগের বিরুদ্ধে শরীরকে শক্তিশালী রাখে। -
শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে:
হরিতকী (Hortoki gura) শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার জন্য উপকারী, যেমন হাঁপানি, কাশির সমস্যা ইত্যাদি।
ব্যবহারের পরিমাণ ও পদ্ধতি:
সাধারণত এক চামচ হরিতকী গুঁড়া জল বা মধু দিয়ে গ্রহণ করা হয়, তবে এর পরিমাণ এবং ব্যবহার উপযুক্ত পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিত।
হরতকির আরও কিছু উপকারিতা ও ব্যবহারঃ
-
রূপ সম্পর্কীয় নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধানেঃ
আমাদের ত্বক বা চুলের সমস্যায় যে হরিতকী (Hortoki) ভাল কাজ করে। ১ চামচ হরিতকী পাউডার, হাফ চামচ বেসন, হাফ চামচ মুলতানি মাটি, ১ চামচ গোলাপ জল এসব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। জল দেবেন না, শুধু গোলাপ জল দিয়ে গুলবেন। এই পেস্ট মুখে মেখে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর সাধারণ জলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দু দিন করুন আর একমাস টানা করুন।
-
চুলের সমস্যায়ঃ
খুশকি, চুল পড়া, মাথা চুলকুনি, সাদা চুল এসব সমস্যায় হরিতকী হতে পারে এ টু জেড সমস্যার একমাত্র সমাধান। চুলের জন্য তো আমরা ত্রিফলা ব্যবহার করিই। আর এই ত্রিফলার অন্যতম উপাদান হরিতকী। তাই নিশ্চিন্তে চুলের জন্য ব্যবহার করুন। ২ চামচ হরিতকী পাউডার, ১ চামচ আমলা পাউডার, হাফ চামচ বহেরা পাউডার আর হেনা পাউডার। একটি পাত্রে সব উপকরণ নিয়ে জল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। সপ্তাহে এক দিন চুলে এই মিশ্রণ ব্যবহার করে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর ভাল করে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করে নিন। শ্যাম্পু আলাদা করে করতে হবে না। এতে চুল ফুরফুরে হবে। চুলের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
-
ব্রণ কমাতে (Hortoki gura)
তেলতেলে ত্বক যাদের তাঁদের র্যারশ, ব্রণ খুবই হয়ে থাকে। আর ব্রণ কমে গেলেও ব্রণর দাগ সহজে যেতে চায় না। কিন্তু হরিতকীর সাহায্যে এই দাগ দূর করা সম্ভব। ২ চামচ হরিতকী, ১ চামচ চন্দন বাটা, ১ চামচ কাঁচা হলুদ বাটা। সব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে নিন। ব্রণ যে যে জায়গায় হয়েছে সেই সেই জায়গার ওপর দিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট মতো। তারপর সাধারণ তাপমাত্রার জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
এটি এক দিন ছাড়া ছাড়া করুন খুব ব্রণর সমস্যা হলে। কম ব্রণ থাকলে বা ব্রণর দাগ কম থাকলে সপ্তাহে তিন দিন করলেই হবে। এক মাসের মধ্যে অনবদ্য ফল আপনার চোখের সামনেই থাকবে। হরিতকী আর হলুদ, এই দুইয়ের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ যাতে কম হয় তা দেখবে। চন্দন অতিরিক্ত তেলতেলে ভাবও কমাবে।
এটি (Hortoki) ব্যবহারের আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি আপনি অন্য কোনো ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন।