Josti modhu gura | যষ্টিমধু গুঁড়া
যষ্টিমধু (Licorice) একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা প্রাচীন কাল থেকে নানা রোগের প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Glycyrrhiza glabra এবং এটি বিশেষত তার মিষ্টি স্বাদের জন্য পরিচিত। যষ্টিমধু গুঁড়া (Liquorice powder) যা যষ্টিমধু গাছের মূল থেকে তৈরি করা হয়। যষ্টিমধুর মূল থেকে এক ধরনের মিষ্টি পদার্থ বের হয়, যা খাদ্য ও ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
যষ্টিমধুর আছে অনেক ঔষধি গুণ, যা বিভিন্ন রোগ উপশমে ও শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফুটন্ত পানিতে পরিমাণমতো যষ্টিমধু ভিজিয়ে ঠান্ডা করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন। দুধের সঙ্গে পান করা যায়। পরিমাণমত শুধু গুঁড়াও খাওয়া যেতে পারে। চায়ে দিয়ে পান করা যায়। শেকড় চিবিয়ে রস খাওয়া যায়।
যষ্টিমধু প্রতিরক্ষা নার্ভকে উন্নত করে এবং মাইক্রোবিয়াল আক্রমণ প্রতিরোধক লিম্ফোসাইট এবং ম্যাক্রোফেজ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি ইমিউন সম্পর্কিত অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া এবং অটোইমিউন জটিলতা হ্রাস করে।
Table of Contents
Toggleযষ্টি মধুর উপকারিতাঃ-
- কাশি ও গলাব ̈থা কমাতে যষ্টিমধু অত ̈ন্ত কার্যকর।
- গরম পানি অথবা চায়ের সাথে যষ্টিমধু মিশিয়ে পান করলে বুকে জমে থাকা কফ ও খুসখুসে কাশি সেরে যায়।
- যষ্টিমধু মুখের দুর্গন্ধ দূর করে ও তোতলামি সমস্যা সমাধান করে।
- যষ্টিমধুর গুঁড়া পানিতে ভিজিয়ে তার সাথে মধু মিশিয়ে পান করলে পেটে জমে থাকা গ্যাস দূর হয় ও অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রশমিত হয়।
- যষ্টিমধুর গুঁড়া দুধের সাথে মিশিয়ে পান করলে ̄সৃতিশক্তি প্রখর হয়।
- যষ্টিমধুর গুঁড়া সাথে ঘি মিশিয়ে মুখে ব্যহার করলে মুখের ব্রণ, বলিরেখা ও চর্মরোগ দূর হয় এবং ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।
- যষ্ঠিমধু, তিলের তেল ও আমলকী একসাথে মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ ও খুশকি দূর হয়।
- যষ্টিমধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ইমিউন সিস্টেম বা রোগ পধতিরোধ তন্ত্রকে শক্তিশালী করে তোলে।
- যষ্টিমধুর গ্লাইসিরাইজিক অ্যাসিড মাস্টকোষ থেকে হিস্টামিন নিঃসরণ কমিয়ে এলার্জি প্রতিরোধ করে।
- যষ্ঠিমধুতে গ্লাইসিরাইজিন থাকে যা বিষাক্ত উপাদানের হাত থেকে লিভারকে সুরক্ষিত রাখে।
Josti modhu gura বিভিন্ন উপকারিতা
এটি মূলত গাছের মূল থেকে তৈরি হয় এবং বহু শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর বিভিন্ন উপকারিতা নিম্নরূপ:
-
গলা ও শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্য:
যষ্টিমধু গুঁড়া (Josti modhu gura) গলা ব্যথা, কাশি, গলা খুসখুস, শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় সহায়ক। এটি মিউকাসকে পাতলা করে শ্বাসতন্ত্রের কোষ থেকে অপসারণে সহায়তা করে। -
পাচনতন্ত্র:
যষ্টিমধু গুঁড়া পেটের সমস্যা যেমন অ্যাসিডিটি, গ্যাস্ট্রাইটিস, পেটের আলসার ইত্যাদির জন্য উপকারী। এটি পেটের প্রদাহ কমিয়ে পেটের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। -
দেহের শক্তি বৃদ্ধি:
এটি শরীরে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং ক্লান্তি দূর করতে সহায়ক। দীর্ঘ সময় কাজ করার পর বা শারীরিক কসরত শেষে এটি দেহকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়ক। -
ত্বকের জন্য উপকারিতা:
যষ্টিমধু গুঁড়া (Josti modhu gura) ত্বক পরিষ্কার করতে এবং ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়ক। এটি ত্বকের প্রদাহ, এলার্জি এবং ব্রণ কমাতে সহায়ক। -
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালীকরণ:
এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে, কারণ এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে। -
মানসিক চাপ কমানো:
যষ্টিমধু গুঁড়া মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। এটি স্নায়ু শিথিল করতে সাহায্য করে এবং মানসিক শান্তি আনে। -
হরমোন সমতা:
এটি শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক এবং বিশেষ করে মহিলাদের মাসিক স্বাস্থ্য এবং হরমোনাল ইমব্যালেন্স সমাধানে সহায়ক। -
ওজন নিয়ন্ত্রণ:
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যষ্টিমধু গুঁড়া (Josti modhu gura) মেটাবলিজম বাড়াতে এবং অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ কমাতে সাহায্য করতে পারে, যা ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় সহায়ক। -
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
যষ্টিমধু প্রতিরক্ষা নার্ভকে উন্নত করে এবং মাইক্রোবিয়াল আক্রমণ প্রতিরোধক লিম্ফোসাইট এবং ম্যাক্রোফেজ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি ইমিউন সম্পর্কিত অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া এবং অটোইমিউন জটিলতা হ্রাস করে।
সতর্কতা:
যষ্টিমধু অনেক উপকারিতা থাকলেও যষ্টিমধু একটানা খাওয়া উচিত নয়। কিছুদিন বিরতি দিয়ে খাওয়া ভালো। কারণ অতিরিক্ত খাওয়া হলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে-
- দীর্ঘ সময় ধরে যষ্টিমধু খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
- অত্যধিক খাওয়ার ফলে পেশি দুর্বলতা, মাথাব্যথা, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।
- পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে।
- উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, কিডনি, হাইপোথাইরয়েটিজমে আক্রান্ত রোগীদের এটি খাওয়া উচিত নয়।