বাদামের পুষ্টিগুণ নিচে উল্লেখ করা হলো-
ফল ও শাকসবজির মতো আমাদের শরীরের জন্য খুব পুষ্টিকর এক খাবার হলো বা-দাম। এতে থাকা প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন, পুষ্টি উপাদান আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। মস্তিষ্কের জন্য ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বা-দাম বেশ উপকারি। ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতেও ভূমিকা রাখে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখা ও হাড় মজবুত করতেও এটি সহায়ক।
সাত ধরনের badam, যা বিভিন্ন ভাবে আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে, সেগুলো সম্পর্কে জানি চলুন।
Table of Contents
Toggle* আখরোট :
ওয়ালনাট বা আখরোট হলো badam প্রজাতির অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। এতে ভিটামিন সি, বি, ই, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ও পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। আখরোট মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, হজমে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিনের অভাবজনিত রোগ অ্যাভিটামিনোসিস দূর করে। এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ও কয়েক ধরনের ক্যানসার রোধে সহায়তা করে আখরোট।
আখরোট খাওয়ার উপকারিতা
মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
গর্ভাবস্থায় উপকারী
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ভালো ঘুমের জন্য
* চীনা বাদাম :
পি নাট বা চীনা বা-দামে আছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ডি, বি, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও পুষ্টি উপাদান। এতে ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর থাকায় তা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভালো
চিনা বাদামের উপকারিতা:
* হ্যাজেল নাট :
মূলত তুরস্ক ও ইতালিতে বেশি উৎপাদন হওয়া হ্যাজেল নাট মিনারেল, ভিটামিন ই এবং পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের উৎস বলা হয়। এতে কার্বোইড্রেটও আছে বেশ। হৃদযন্ত্রকে রক্ষা করতে ও কোলেস্টেরল কমাতে ভালো ভূমিকা রাখে।
* কাঠ বাদাম :
আমন্ড বা কাঠ বাদামে আছে প্রচুর ভিটামিন ই ও ম্যাগনেসিয়াম। তাই এটি চুল, ত্বক ও নখ ভালো রাখে। এছাড়া এটি বিপাক প্রক্রিয়া সচল রাখে ও ব্লাড সুগার স্বাভাবিক করে। কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ডাযাবেটিস হওয়ার আগে কাঠ বা-দাম ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখে।
কাঠবাদামের উপকারিতা:
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি
ক্যানসার প্রতিরোধে
হার্টের সুস্থতায়
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে
হাড় ও দাঁত ভালো রাখে
ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক
* কাজু বাদাম :
কাজু বাদামে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এ, আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম আছে অনেক। এটি কোলেস্টেরল কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায় ও দাঁতের এনামেল মজবুত রাখে।
পুষ্টিগুণে ভরপুর
কাজুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ।USDA National Nutrient Database তথ্যমতে ১ আউন্স (২৮.৩৫ গ্রাম) কাঁচা কাজু (Kaju Badam) রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। যথা-
শক্তি- ১৫৭ ক্যালরি, শর্করা-৮.৫৬ গ্রাম, চিনি-১.৬৮ গ্রাম, আঁশ-০.৯ গ্রাম, আমিষ-৫.১৭ গ্রাম, চর্বি-১২.৪৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম-১০ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম- ১.৮৯ মিলিগ্রাম, আয়রন- ৮৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম-১৮৭ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম-১৬৮ মিলিগ্রাম, সফরাস-৩ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম-১.৬৪ মিলিগ্রাম। তাছাড়াও ভিটামিন এ, সি, ই এবং বি সহ কপার, ম্যাংগানিজ, সেলেনিয়াম, এন্টিঅক্সিডেন্ট কাজু (Kaju Badam) বিদ্যমান। যা ওজন হ্রাস, রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ সহ মজবুত হাড় ও দাঁত তৈরিতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারেঃ অন্যান্য বা-দাম বেশি পরিমাণে ক্যালোরি এবং চর্বি সমৃদ্ধ।
* পাইন নাট :
মূলত ইউরোপে পাইন গাছ থেকে পাওয়া এই বা-দামে ভিটামিন ই, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যামাইনো অ্যাসিড বেশি থাকায় তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি সহজে হজম হয়,তাই শিশু ও প্রেগন্যান্ট নারীদের এই বা-দাম খেতে পরামর্শ দেয়া হয়। মস্তিষ্কের সমস্যা, চুল ও ত্বকের সমস্যা নিরসনেও উপকারি।
* পেস্তা বাদাম :
পেস্তা বাদামে অন্য সব বাদামের চেয়ে বেশি ভিটামিন, অ্যামাইনো অ্যাসিড ও মিনারেল আছে। এতে থাকা কপার, ম্যাগেনেসিয়াম, ফসফরাস দৃষ্টিশক্তির সমস্যা ও হাড়ের সমস্যা দূর করে।
পেস্তা বাদাম এর উপকারিতা:
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
ক্যানসার প্রতিরোধ করে
প্রোটিনের ভালো উৎস
চুল পড়া রোধ করে
হজমশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
সতর্কতা
পুষ্টিবিদরা বলেন, যেহেতু বাদাম একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার, তাই এটি পরিমিত খাওয়া উচিৎ। বাদাম প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ গ্রামের বেশি খাওয়া উচিৎ না।